আমি আগেও লিডার ছিলাম তাই এখনও আমি লিডার হতে পারি
মিথ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে যে অভিজ্ঞ, যে আগেও লিডার হিসেবে ছিল, সে এখনও লিডার থাকতে পারবে। আসলে অভিজ্ঞতা তখনই কাজে দেয় যখন মানুষ বিনয় ও ম্যাচুরিটির মাধ্যমে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে, যখন মানুষ বুঝতে পারে যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আর পরিস্থিতিই ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেক লিডার তাদের অতীতের অভিজ্ঞতা ভুলতে পারে না এবং হুট করেই লিডারশিপের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নেমে পড়ে।
আমি অনেক ব্যস্ত তাই আমাকে একসাথে অনেক কাজ করতে হয়
লিডার হিসেবে আপনার মূল কাজ হল অন্যদের কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া। সরাসরি কোন রিপোর্টে দেখার সময় ইমেইলের জবাব দিয়ে দেওয়াটা একমাত্র যথেষ্ট না। লিডার হিসেবে আপনার সদা সর্বদা উপস্থিত থাকতে হবে কিন্তু তারপরও অনেক লিডারই কাজের সময় অতি সহজে অন্যদিকে মনযোগ সরিয়ে নেয়।
আমার লিডারশিপ দক্ষতা উন্নত করার মত সময় আমার হাতে নেই
আপনি কখন অল্প ব্যস্ত থাকবেন এবং আপনার লিডারশিপ দক্ষতা উন্নত হলে আপনার প্রতিষ্ঠান কতটুকু এগিয়ে যাবে তা ভাবুন।
লিডাররা জন্মগতভাবেই লিডার, লিডারশিপ শেখা যায় না
যদিও সবাই লিডার হতে পারে না বা হতে চায় না, লিডারশিপ কিন্তু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শেখা সম্ভব। লিডারশিপ শেখা যায় না এই কথা লিডারশিপ দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্তরায়।
প্রতিষ্ঠানে কী ঘটছে সে ব্যাপারে আমার কর্মচারীরা আমার কাছে সত্যটাই বলে
হয়ত তারা সত্যিটাই বলে। তবে, পদ মর্যাদা ও ক্ষমতার ক্ষেত্রবিশেষে আপনি যদি মনে করেন তারা আপনার কাছে পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সহজে সত্য কথা তুলে ধরছেন তাহলে আপনি বোকামি করছেন। আপনি যদি তাদের কাছ থেকে সব তথ্যই চেয়ে থাকেন এবং তথ্য দেওয়ার জন্য যদি কর্মচারীদেরকে সমস্যায় পড়তে না হয়, তাহলে ভিন্ন কথা, সেক্ষেত্রে হয়ত বেশিরভাগ সময়ই তারা আপনাকে সত্যটাই বলবে।
লিডার হিসেবে আমাকে সবসময় অন থাকতে হয়
অন্যদের থেকে লিডারদেরকে জবাবদিহি বেশি করতে হয় ঠিকই, তার মানে এই নয় যে সব সময় লিডারশিপের ভাব ধরে থাকতে হবে। যখন লিডারকে সারাক্ষণই কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করতে হয় তখন কিন্তু নিজস্বতা বজায় রাখা ও ভুল সংশোধন করা হয়ে উঠে না। মাঝে মাঝে নিজের লিডারশিপকে বন্ধ রাখতে হয় যাতে অন্যরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণে এগিয়ে আসতে পারে।
আমিই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেছি, তাই আমিই একে লিড করার অধিকার রাখি
কোন কিছুর শুরুতে আপনি থাকলে পরবর্তীতে আপনি বলতে পারেন যে আপনি জিনিসটির শুরু থেকেই সঙ্গে ছিলেন। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুর হাল ধরে রাখতে হলে আপনাকে সেই অনুযায়ী যোগ্যও হতে হবে। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ব্যক্তি স্বার্থ নয়, দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। আর এটা সচেতন প্রয়াসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকে থাকা মানে কিন্তু লিডারশিপ নয়।
আমাকেই কাজ করে দেখাতে হবে, দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, ইত্যাদি
সঠিক কাজ করে দেখালে কোন ক্ষতি নেই। তবে বেশিরভাগ সময়ে দেখা যায় লিডাররা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে যা তাদেরকে মানায় না, এমন কাজ যা অন্যদের করা সাজে, একজন লিডারের নয়। দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইলে লিডারশিপের কাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন যেমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি
লিডারদের ভয় থাকেনা
এটা মোটেও সঠিক নয়, সবারই কোন না কোন ভয় থাকে যা সহজে দূর হয়না। আমাদের ভয়কে চিহ্নিত করতে হবে যাতে আমরা অজানা কোন কিছু মোকাবেলার সময় সজাগ থাকতে পারি। ভয় কাটানোর চেয়ে আমাদের আগে জানতে হবে আমাদের ভয়টা কোথায়, কী কারণে।