কর্মক্ষেত্রে কিছু সাধারণ কিন্তু কঠিন পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে এখানে ৭টি পন্থা তুলে ধরা হল।
বেশি কাজ করতে চাইলে কাজের ঘন্টা কমিয়ে আনুন
প্রথাগত জ্ঞান বলে বেশি সময় কাজ করলে বেশি কাজ সম্পাদন করা যায়। তবে বাস্তবে তা সত্য নয়। বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৪০ ঘন্টার পরিবর্তে ৬০ ঘন্টা কাজ করলে বেশি কাজ সম্পাদন করার সম্ভাবনা থাকে, তবে তা শুধুমাত্র পরবর্তী ৩ সপ্তাহের জন্য বলবৎ থাকে। এরপর অনেকেই কাজের ভারে নুজ্ব্য হয়ে পড়ে, যে ভুল হওয়ার কথা না সেই ভুলগুলো করে বসে এবং কম কাজ করে থাকে। একটি বাস্তবসম্মত কাজের সময় মেনে চললে আরো বেশি কাজ করা সম্ভব।
কর্মক্ষেত্রে ঝামেলাকারীকে সামাল দিন
যখন কেউ ঝামেলা করে, আপনি হয় তাকে মানাবেন বা তার উপর মেজাজ হারিয়ে ফেলবেন। যদি আপনি তাকে মানানোর চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি তাকে প্রশমিত করতে পারবেন। আর যদি আপনি নিজেই মেজাজ হারিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে সম্পর্কে ছেদ ঘটবে। তাই যা করতে হবে তা হল কর্মক্ষেত্রে পেশাচারি আচরণ ও কথা বলার ধরন বজায় রাখুন। যদি ঝামেলাকারী পিছু না হটে, তখন বলুন, “আপনার মাথা ঠান্ডা হয়ে এলে আমরা আবার এই ব্যাপারে কথা বলে নেব” তারপর তার সামনে থেকে চলে যান এবং আপনার হাতের কাজে মন দিন।
ভুয়া পরিসংখ্যান চিহ্নিত করা
পরিসংখ্যান তখনই বৈধ যদি এর পেছনের তথ্যগুলো সত্য হয়ে থাকে। যদি তথ্য এদিক-সেদিক করে প্রতিষ্ঠান কোন সুবিধা করতে পারে, তাহলে ধরে নিতে হবে ঐ প্রতিষ্ঠানের তথ্যগুলো শতভাগ নির্ভুল হবে না। যেমন, এই পর্যন্ত যেকোন মার্কেটিং গ্রুপ দ্বারা অর্থায়নকৃত সকল মার্কেটিং গবেষণায় কীভাবে মানুষদের দিয়ে আরো বেশি টাকা ব্যয় করা যায় সেটাই মূল উপজীব্য।
মিথ্যাবাদীকে চেনা
অনেকেই ধরে নেয় যে মানুষের চোখ দেখে বলে দেওয়া যায় কেউ মিথ্যা বলছে কিনা, তবে এটি সর্বদা সত্য নয়। যারা সচরাচর মিথ্যা বলে তাদের চোখ দেখে প্রায়ই বোঝার উপায় থাকে না যে আসলেই তারা মিথ্যা বলছে। তাই কারো কথা যদি আপনার কাছে মুখস্থবিদ্যার মত শোনায় বা মুখে মুখে গিয়ে বদলে যায়, তাহলে সেই কথার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অনেক সময় একজন প্রতিবার নিজের কথা সত্য বলে দাবি করে বসবে কিন্তু দেখা যাবে যে সেই মিথ্যা বলছে।
আপনার সিভি দিয়ে আপনার চাকুরি নিশ্চিত হয় না
একটি গতানুগতিক সিভি হল একটি সেলস ব্রশিয়ারের মত যা সবাই প্রথমে দেখে কিন্তু তা তাদের আকর্ষণ করে না। সিভি ঘষামাজা করার পেছনে যে সময় ব্যয় হয় তা বরং যে কাজের জন্য আপনি আবেদন করতে চাচ্ছেন সেই কাজের আদ্যোপান্ত জানতে ব্যবহার করুন [ঐ প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সাথে আলাপের মাধ্যমে] এবং সেই কাজের চাহিদা অনুযায়ী আপনার সিভিকে সাজিয়ে নিন।
উল্টো দিক দিয়ে আপনার ইমেইল লিখুন
যদি আপনি চান আপনার ইমেইল দেখে প্রাপক একটি সিদ্ধান্ত নিতে উপনীত হবে, তাহলে ইমেইলের শেষাওংশ দিয়ে শুরু করুন যেখানে আপনি প্রাপককে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাগিদ দেবেন। ঐ সিদ্ধান্তের সপক্ষে ছোট ছোট যুক্তি লিখে নিন, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রাপককে তাগিদ দিন বা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানিয়ে দিন। এরপর ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ঐ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে প্রাপকের যে সুবিধা হতে পারে সেটা তুলে ধরুন।
সব বস যা চায়
বেশিরভাগ বস বলে তারা সততা, ন্যায়পরায়ণতা, সবকিছুতে মনযোগী ইত্যাদি গুণাবলী কদর করে থাকে। যদিও এগুলো জরুরি, আসল কথা হল আপনার কাজের বৃত্তান্তে যাই বলা থাকুক না কেন বা আপনার পদবী যাই হোক না কেন, আপনার বস সব সময় এটাই চায় যে আপনি কাজের মাধ্যমে তাকে সফল হতে সাহায্য করুন। এটাই সত্য।