কারিশমা থাকলেই সত্যিকারের নেতৃত্ব নিশ্চিত হয় না। এই ৫টি ধাপ অনুস্রণের মাধ্যমে আপনি এই দুটি বিষয়ের মাঝে যোগসূত্র ঘটাতে পারবেন।
লিডারশিপে কারিশমা আর নিজস্ব কারিশমা দুটি আলাদা ব্যাপার। দুটির জন্যই একই ধরনের ব্যক্তিগত গুণাবলী – আত্মবিশ্বাস প্রদর্শন, অন্যদের কাজে লাগানো, আইডিয়া বানাবার ও লক্ষ্য অর্জন করার দক্ষতা – দরকার হয় এবং এর নেতাদের কার্যকলাপের ভিন্নতা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ব্যক্তিগত কারিশমা ব্যক্তির আচার-আচরণের উপর নির্ভর করে যেরকম আমরা তারকাদের ক্ষেত্রে দেখে থাকি। আর লিডারশিপের কারিশমা বোঝা যায় যখন একজন নেতা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বা আরো বড় অন্য কোন কিছুর স্বার্থে কাজ করে থাকে। ব্যক্তিগত কারিশমা একজন নেতাকে সাহায্য করতে পারে কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেলে কিন্তু তা ভালো নয়। যেসব নেতা সব সময় অন্যদের প্রভাবিত করার ব্যাপারে জোর দেয়, তারা তাদের অনুসারীদের প্রেরণা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষীণ করে দেয়। লিডারশিপের ক্ষেত্রে কারিশমা তৈরি করতে চাইলে আপনাকে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে যা এখানে দেওয়া হলঃ
১. নিজেকে জিজ্ঞেশ করুনঃ কেন?
আপনি কেন কারিশম্যাটিক হতে চান সেই ভাবনার প্রেক্ষিতেই বোঝা যাবে আপনি কী ধরনের কারিশমা নিজের মাঝে তৈরি করতে চান। নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন আপনি এটি করতে চান? আপনি কী অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান নাকি আপনি কোন নিরাপত্তাহীনতার দরূন এমনটি করতে চাইছেন? নেতাদেরকে অন্যদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে এমনটাই কী আপনার বিশ্বাস? অন্যদের আকর্ষণ করার ফলে আপনার নেতৃত্বের বিকাশ কীভাবে ঘটবে? এর ফলে আপনি প্রতিষ্ঠানকে আরো কত ভালভাবে সেবা করতে পারবেন?
২. নিজের ব্যাপারে সাচ্ছন্দ্য হোন
নিজের কারিশম্যাটিক যোগ্যতাযাচাই করার আগে আপনাকে আগে বুঝতে হবে আপনি কী ধরনের নেতা এবং কেন একজন নেতা হয়েছেন। আপনার নিজস্বতা হল আপনার সব ব্যক্তিগত মূল্যবোধ এবং চালিকা শক্তি সমূহ যা আপনার বর্তমান জীবনে ভূমিকা রেখেছে। নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার জীবনের বর্তমান সময়ে এই নেতৃত্বের ভূমিকা আসলেই সঠিক কিনা এবং আপনি কীভাবে নিজেকে এর জন্য তৈরি করেছেন এবং কীভাবে আপনি আপনার শেখার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন? অনেক নেতাই এই কঠিন প্রশ্নের উত্তরগুলো এড়িয়ে গিয়ে কারিশমার বাহ্যিক দিক নিয়ে বেশি ঝুঁকে পড়েন। তারা ভাবেন, অন্যদের সাথে একটু বেশি বিনীত হলেই চলবে। কিন্তু বেশি বিনয় অনেক সময় বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কারিশমার পেছনে কোন প্রস্তুতি থাকে না তা ঝামেলারই বটে।
৩. নিজের পরিবেশে সাচ্ছন্দ্য হোন
কার্যকর কারিশম্যাটিক নেতারা জানেন তারা কেমন এবং নিজেদেরকে দলের সামনে তুলে ধরতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কারিশমার বেশিরভাগ গুণই বাহ্যিকভাবে প্রকাশ পায়, তাই একজন নেতাকে শিখতে হবে কীভাবে কারিশমা সঠিকভাবে প্রকাশ করা যায়। আপনি কীভাবে অন্যদের সাথে কথা বলেন? অন্যদের সাথে কথা বলার সময় আপনার বাহ্যিক বিষয়গুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন? আবার কথা না বলেও শারীরিক ভাবে অন্যদের সাথে ইন্টার্যাকশান করাও প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব নেতা এসব ব্যাপারে যত্নশীল নয়, তারা সফল হতে পারেনা।
৪. অনুশীলন করুন, দরকার হলে কাউকে কোচ হিসেবে রাখুন
কারিশমা যেহেতু শেখার ব্যাপার তাই একজন কোচের কাছ থেকেই শেখাটাই ভাল। কারিশমার ব্যক্ত ও অব্যক্ত সব বিষয়গুলো অনুশীলন করুন। আপনার বাহ্যিক আচরণের পাশাপাশি আপনার অন্তর্গত চিন্তাধারার প্রক্রিয়া সম্পর্কেও আপনার ধারণা থাকতে হবে। যেমন, আপনি যদি পাবলিক স্পিকিং দক্ষতা অর্জন করতে চান তাহলে আপনার কন্ঠের অনুশীলন ছাড়াও আপনাকে জানতে হবে কেন পাবলিক স্পিকিং আপনার জন্য জরুরি।
৫. ভাল পরিবেশে অনুশীলন করুন
অনেক নেতাই ভাবেন যে তারা তাদের লিডারশিপ ক্ষমতা উন্নত করতে সক্ষম। পূর্ব প্রস্তুতি ও চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তারা তাদের দলের সামনে নতুন নতুন বিষয় উপস্থাপন করতে চায় যা খুব একটা কার্যকর নয়। কোন কিছু উপস্থাপন করার আগে সেটা অনুশীলন করে নেওয়াটা জরুরি। একজন কোচের সাথে একান্তে অনুশীলনের ফলে আপনি আপনার ভুলগুলো থেকে শিখতে পারবেন। পাবলিকলি যেকোন ভুল হতেই পারে, কিন্তু প্রাইভেটলি ভুলগুলো বেশি হয় এবং তা শুঢরে নেওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে।
নেতা হিসেবে কারিশমা আয়ত্ত্ব করতে চাইলে আপনাকে অল্প অল্প করেই শিখতে হবে। নেতা হিসেবে আপনার ভূমিকার জন্যই আপনাকে কারশিম্যাটিক দক্ষতা অর্জন করে নিতে হবে। নিজেকে কখনও অন্য কারোর মত করে গড়ে তুলতে পারলেই পরিবর্তন হয় না, আপনাকে আপনার ভেতরের শক্তিকেই কাজে লাগিয়ে আপনার কারিশমা দিয়েই পরিবর্তন সাধন করতে হবে এবং সেটা হবে অন্য যেকোন কিছুর থেকে হাজার গুন বেশি ভাল।
It is very helpfull discussion for leaders how to controll their follower. Ethical issues are not discussed here. It is very important.