অনেক ভাল মানের নেতাও অনেক সময় সকলকে নিয়ে কাজ করার গুরুত্ব বুঝতে পারেন না। উদ্যোক্তা হিসেবে দলের সবার মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। যাতে দলের প্রত্যেকে এটা বুঝতে পারে যে তারা প্রত্যেকে সমানভাবে তার ন্যায্য অধিকার পাবে। তারা প্রতেকেই দলে সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং দলে কোনও গোপন পক্ষপাতিত্ব নেই যা উন্নয়নে বাধা দেয়।
সমতা নিশ্চিতকরণের অন্যতম একটি উপায় হল কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ। যাতে কর্মীরা এটা বুঝতে পারেন যে তারা নারী- পুরুষ নির্বিশেষে সমানভাবে কাজের সুযোগ পাচ্ছে, এটা কেবল মাত্র কোনও পলিসি নয় বরং এটা নেতৃতের একটা অংশ।
নিচের ৫ টি উপায়ে আপনি সবাইকে নেতৃত্ব দিতে পারবেনঃ
১। সবার সাথে সম্পর্ক রাখাঃ
অফিস পার্টি, কোম্পানি রিট্রিট এবং একসাথে দুপুরের খাবার খাওয়া যে কোনও প্রতিষ্ঠানেরই অংশ। কিন্তু দলনেতাকে এটা দেখতে হয় যে যাতে সবাই সেখানে আসে এবং কেউ যাতে তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত না ভাবে। দলের সবাই একসাথে ডিনারে যাবে এটা ভাল উদ্যোগ কিন্তু অনেকই আছেন যাদের পক্ষে সন্ধ্যাটা ডিনারের জন্য ব্যয় করা সম্ভব নয়, তাই নেতাকে দেখতে হয় যাতে এসব অনুষ্ঠান গুলো ছুটির দিনে হয় যাতে সবাই অংশ নিতে পারে।
২। কথা বলার সময় সতর্ক থাকাঃ
মুখের ভাষার দ্বারা মানুষ আহত হয়, তাই শব্দ নির্বাচনে সতর্ক থাকা উচিত। সবসময় সবকথাই যে খুব চিন্তা করে বলতে হবে এমন নয়, কিন্তু মনে রাখতে হবে-অনেক সময় অনেক খেয়ালী মন্তব্য অথবা হাসি কেউ কেউ অন্যভাবেও নিতে পারে। কেউ যদি বলে কারো কথা বলায় ভুল ছিল, তর্ক না করে তা মেনে নেয়া উচিত, ক্ষমা চাওয় উচিতা। নেতা বিশৃঙ্খলা মেনে নিবেন না, তার জন্য যে ই দায়ী হোকনা কেন। সবার কাছ থেকে নেতা কেমন ব্যবহার আশা করেন তার একটি নমুনা তৈরি করবেন। এবং একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পদ্ধতির ব্যবস্থা করা উচিত যাতে সবাই নির্ভয়ে অভিযোগের কথা বলতে পারে।
৩। সবাইকে কথা বলার সুযোগ দেয়াঃ
দলনেতাকেই এটা নিশ্চিত করতে হয় যে, আলোচনা সভায় সবাই যেন কেবল বসে না থাকে বরং কথা বলে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করে অংশগ্রহণ করতে পারে। যদি এমনটি হয় যে আলোচনায় কেবল মাত্র গুটিকয়েক মানুষ অংশ নিতে পারবে তবে সে আলোচনা অর্থহীন। আজকের যুগে অনেকেই স্ক্যাইপ বা অন্যানও অনলাইন প্রযুক্তির সাহায্যে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। এটা নেতার দায়িত্ব যাতে সবাই বুঝতে পারে যে প্রতিষ্ঠানের আলোচনা সভায় সবার কথা বলার সুযোগ আছে।
৪। নিয়োগ এবং পদন্নতিঃ
সব সময় নিয়োগ এবং পদোন্নতির সিধান্ত কেবল মাত্র প্রত্যেকের কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতার উপর নির্ভর করে নিতে হবে। প্রথমেই লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত যে পলিসি গ্রহণ করা হয়েছে তা প্রশংসনীয়, তবে যারা সিধান্ত নিবেন তারা যাতে পক্ষপাত মুক্ত হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। যখন কোনও কর্মীর কাজের মূল্যায়ন হয় তখন যাতে সেই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রভাবমুক্ত হয়। নিরপেক্ষ থাকতে চেষ্টা করতে হবে এবং অন্যদেরও এমন হতে উৎসাহিত করতে হবে।
৫। মেধা অন্বেষণ প্রকল্পকে গোপন না রাখাঃ
মেধা অন্বেষণ প্রকল্পকে কোনও বিভাগ বা দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত না। যখন একজন যোগ্য ব্যক্তিকে খোঁজা হয় যে তার কাজের দ্বারা অন্যদের চেয়ে বেশি দিতে পারে, তখন সে অন্বেষণের কথা প্রচার করা দরকার। হয়ত অযাচিতভাবে সেই বিশেষ জনকে পাওয়া যায়।
এই উপায় গুলো সহজ এবং স্পষ্ট। কিন্তু কখনও কখনও সহজ নিয়ম পালন করাই অনেক কঠিন হয়ে উঠে। দলনেতাকেই অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের কথা মাথায় রাখতে হবে যাতে প্রতিষ্ঠানে একটি সুন্দর কর্ম পরিবেশের সৃষ্টি হয়।