exec-assist-position

আপনার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়লে যেরকম তা ঠিক করার জন্য পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, ঠিক সেরকম আপনার মস্তিষ্ককেও নেতিচাবক চিন্তা ও দুশ্চিন্তামুক্ত করা জরুরি। মস্তিষ্কে লালন করা কিছু কিছু ভ্রান্ত ধারণা পরবর্তীতে আসলেই বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। মানুষেরা তাদের জীবনের ভাল জিনিসগুলোর চাইতে তাদের সমস্যা নিয়ে চিন্তা করতে বেশি পছন্দ করে। পত্রিকায়, টিভির খবরে, অফিসে সহকর্মীদের আলাপচারিতায় সবখানে সবাই সমস্যার কথাই বেশি বলে থাকে। আপনি চাইলে আপনার মস্তিষ্ককে ইতিবাচকভাবে পরিশুদ্ধ করতে পারেন যার ফলে আপনী হয়ে উঠবেন আরো সুখী ও কার্যক্ষম। এই পরিশুদ্ধির জন্য আপনার সময় লাগবে ২১ দিন আর আপনাকে এই কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবেঃ

. আপনার কার্যতালিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি কাজ সবার আগে করে ফেলুন

দিনের শুরুতে আপনার কর্ম পরিকল্পনা করে নিন এবং সবচেয়ে তিনটি জরুরি কাজ চিহ্নিত করুন এবং ঐ কাজগুলোই আগে সম্পাদন করুন। যে কাজটা করা জরুরি, সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ হবে এমন কিন্তু নয়। মানুষের মধ্যে একটা স্বভাব আছে যে তারা জরুরি জিনিসের প্রতি বেশি মনযোগ দেয়। জরুরি কাজ  করতে গিয়ে গুরত্বপূর্ণ কাজ করা ভুলে গেলে মানসিক অস্বস্তি বাড়বে বৈ কমবে না। তাই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কোন তিনটি কাজ আজকের দিনের জন্য আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সে অনুযায়ী আপনার কাজ চালিয়ে যান। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সাধারণত কঠিন হয়ে থাকে, তাই আগেভাগে সেগুলো করে রাখলে পরের কাজগুলো করা অনেক সহজ হয়ে যায়।

. ছোট ছোট সাফল্য খেয়াল করুন এবং তা লিখে রাখুন

সবাই চায় পারফেক্ট ভাবে কাজ করতে। কিন্তু আমরা কেউই পারফেক্ট নই এবং এ ব্যাপারটি হয়ত কাউকে হতাশায় ফেলে দিতে পারে। একবার হতাশ হয়ে গেলে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা কিন্তু একটু কঠিন হয়ে যায়। হতাশাকে দূরে রাখতে আপনার ছোট ছোট অর্জনগুলোকে লিপিবদ্ধ করে রাখুন। ধরুন আপনার কার্যতালিকায় ২৫টি কাজ আছে, তার মধ্যে আপনি মাত্র ৩টি সম্পন্ন করেছেন, অল্প হলেও এই অর্জনটি লিখে রাখুন।  আমরা কী করেছি তার থেকে কী করিনি সেটা নিয়েই বেশি ভাবি। এর পরিবর্তে সারাদিনে আপনি যেই তিনটি কাজ ভালভাবে করতে পেরেছেন সেগুলো নিয়ে ভাবুন। কারন ছোট ছোট কাজের অর্জনই একদিন বড় সাফল্য নিয়ে আসবে আপনার জন্য।

. যা শুরু করেছেন তা শেষ করার জন্য অংগীকার করুন

কেউ কেউ আছেন যে ৯০% কাজ করে তা ফেলে রেখে দেন কারণ তারা ভাবেন কাজটা তো এক কথায় হয়েই গেছে। কিন্তু ১০০% হলেই বরং সেটা আপনার কৃতিত্ব হবে। কিছু কিছু কাজ আছে যা একদিনে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না, তাই এই ধরনের কাজগুলোকে ভাগ করে নিন। যেমন আপনি ভাবলেন আপনার পুরো বাসায় নতুন করে রঙ লাগাবেন, একদিনে তো তা করা সম্ভব নয়, তাই না? বরং একদিনে যদি আপনি একটি রুমেও রঙ লাগানোর শেষ করতে পারেন, তাহলে হয়ত কয়েকদিনের মধ্যে পুরো বাসায় রঙ লাগানোর শেষ করতে পারবেন। এভাবে এগিয়ে গেলে আপনি মনে স্বস্তি বোধ করবেন আর যদি কাজটি ঝুলিয়ে রাখেন তাহলে তা আপনার দুশ্চিন্তা বাড়াবে।

. কাজের পাশাপাশি ব্যায়াম ও বিশ্রাম নেওয়ারও অংগীকার করুন

ব্যায়াম ও বিশ্রাম দুটিই আপনার স্বাস্থ্যই নয়, বরং আপনার মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে বার্ধক্য ও দুশ্চিন্তার ফলে মস্তিষ্কের যে ক্ষয় হয় তা ব্যায়ামের মাধ্যমে রুখে দেওয়া সম্ভব। তাই চেষ্টা করুন সপ্তাহের তিন দিন অন্তত আধা ঘন্টা করে হলেও ব্যায়াম করার। আধা ঘন্টার ব্যায়াম আপনার জন্য যে উপকার করবে তা আধা ঘন্টা সময় চলে যাওয়ার তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়াও বিশ্রাম মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। আমাদের মস্তিষ্ক একটি ব্যাটারির মত এবং তা পুরোপুরি রিচার্জ করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। আপনার ঘুম পর্যাপ্ত হলে আপনি যত ইচ্ছা কঠোর পরিশ্রম করে আপনার দেহের ও মনের ব্যাটারির শক্তি ক্ষয় করতে পারেন। মস্তিষ্কেরও বিশ্রাম দরকার আছে। সপ্তাহের একদিন বিশ্রামের জন্য রাখুন, তাহলে দেখবেন অন্য ছয় দিন আপনি ভালভাবে আপনার কাজগুলো করতে পারছেন।

[অনুবাদ]

 

Similar Posts

Leave a Reply