আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য নেতিবাচক আবেগগুলো শক্তিশালী গাইড হিসেবে কাজ করে।
আপনি যেহেতু একজন মানুষ, কর্মজীবনে নিজেকে অনেক বেশি ইমোশনাল হিসেবে খুঁজে পাবেন। এর বেশিরভাগ ইমোশনই হতে পারে ইতিবাচক যেমন – আনন্দ, মজার, আশ্চর্য, কৃতজ্ঞতা ইত্যাদি।
যদিও এটাই স্বাভাবিক যে আপনি এর মাঝে কিছু নেতিবাচক ইমোশনও খুঁজে পাবেন। কিন্তু এখানে ব্যপারটি এমন যে, আপনার ভবিষ্যত সাফলতা নির্ভর করছে আপনি কিভাবে আপনার নেতিবাচক ইমোশনগুলো নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
মোটের উপর, যখন সব কিছু ভালো ভাবে চলে তখন ব্যবসা নিয়ন্ত্রন এবং চাকুরি চালিয়ে যাওয়া খুবই সোজা। কিন্তু তখনি সমস্যা শুরু হয় যখন সময় খারাপ যায় এবং সবকিছু আপনার মন মত হয় না।
এসব কথা মাথায় রেখেই এখানে ছয়তি সাধারন নেতিবাচক মনভাবের কথা বলা হল, এবং সাথে সাথে এও বলা হলো কিভাবে এই নেতিবাচক মনোভাব ব্যবহার করে আপনি আরও বেশি সফল হতে পারবেন।
১। যদি আপনার ভয় লাগেঃ
এক ধাপ পিছনে চলে আসুন এবং পরিস্থিতিকে সাধারন ভাবে দেখুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন – “আসলেই কি আমার ব্যবসা বা চাকুরি ঝুকিতে আছে?” উত্তর যদি না হয়, তবে আপনার মনে উত্তেজনা থাকতে পারে কিন্তু ভয় থাকবে না, ঠিক যেমনটা আপনি রলার কোস্টারে উঠলে মনে হয়। সুতরাং রাইড উপভোগ করুন।
কিন্তু যদি পরিস্থিতি আসলেই ভয়াবহ হয়, তবে শারিরিক কিছু একটা করুন – যেমন একটু হেঁটে আসুন, এতে আপনার মাথা পরিস্কার হয়ে যাবে। যখন আপনি ফিরে আসবেন, তখন একটা কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করুন যেখানে বলা থাকবে আপনি কিভাবে এই পরিস্থিতি মকাবেলা করবেন।
সেই সব সময়ের কথা চিন্তা করুন যখন আপনি এই সব সমস্যা সফলতার সাথে মকাবেলা করেছেন অথবা অন্য কোন সময়ের কথা যখন সময়টা খুব প্রতিকুল ছিল। এবং এরপর আপনি আপনার কর্ম পরিকল্পনার প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ করার দিকে এগিয়ে যান।
২। যদি মনে হয় আপনি বাদ পড়ে গেছেন
ঠিক করুন যে আপনি কি আসলেই এই বাদ পরার সিধান্ত মানছেন কিনা? যদি এই সিধান্ত একজন নির্বোধ/মূর্খ থেকে আসে, তবে এটা আপনার বিবেচনায় আনার দরকার নেই।
আপনি যদি অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেন, তবে ভালো করে খুঁজে দেখুন যে আপনি পরিস্থিতিটিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারছেন কিনা? জিজ্ঞেস করুন – “ঐদিন আপনি বলেছিলেন ……… এবং আমার ব্যপারটা খারাপ লেগেছিল, আপনি কি ব্যপারটা আমাকে আরেকটু বুঝিয়ে বলতে পারবে কি হয়েছিলো?”
সবচেয়ে বড় ব্যপার হচ্ছে “বাদ পরা” ব্যপারটা হচ্ছে একটা বিভ্রান্তি। একেকজন মানুষ একেকটা
ব্যপার একেকভাবে ব্যখা করে। হয়ত আপনি বাদ পড়ে গেছেন, কারন অন্য পাশের মানুষ অন্য কিছু খুঁজেছিল।
৩। যদি আপনার রাগ অনুভুত হয়
আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে পরিস্থিতি থেকে দূরে চলে যাওয়া। উঠে দাঁড়ান, একটু হেঁটে আসুন, অথবা এমন কিছু করুন যা আপনাকে ঐ পরিস্থিতি থেকে দূরে নিয়ে যাবে। যদি এমন কিছুই কারার অবস্থা না থাকে তবে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সোজা এবং উল্টো করে গুনতে থাকুন।
যখন আপনি নিজেকে শান্ত করতে পারবেন, তারপর বের করুন কেন আপনার রাগ হয়েছিলো? বেশিরভাগ সময় আপনি দেখবেন যে, অন্য কেউ কোন নিয়ম মানে নি বা আপনার মন মত কাজ করে নি।
তাদেরকে রাগ দেখিয়ে উড়িয়ে দেয়ার চেয়ে, বের করুন কিভাবে আপনি তাদেরকে এই নিয়মগুলোর গুরুত্ব বঝাতে পারবেন যাতে এই ব্যপারগুলো ভবিষ্যতে আর না ঘটে।
৪। যদি আপনি হতাশ বোধ করেন
কর্মক্ষেত্রে এই অবস্থা আসে যখন কোনো কিছুর ফলাফল আপনার মনমত হবে না, বিশেষকরে যে পরিমান কাজ এবং কর্মোদ্যম আপনি আশা করেছিলেন। আপনি জানতেন যে আপনার লক্ষ্য অর্জনযোগ্য কিন্তু এটা শেষ পর্যন্ত টা হলো না।
এক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে, আপনার পরিকল্পনা এবং আচরন পুনঃবিবেচনা করা। এটা কি আসলেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবচেয়ে সঠিক রাস্তা কিনা? যদি তা না হয় তবে আপনার হতাশা আপনাকে বলে দিবে আপনার পরিকল্পনা কি হওয়া উচিত এবং তা কিভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত।
যদি আপনার পরিকল্পনা সঠিক হয় এবং আপনার ব্যবহার যথার্থ হয় তবে আপনাকে ধৈর্য অনুশীলন করতে হবে। লক্ষ্য নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার ফলাফল দেখুন এবং ব্যবহার সংযত রাখুন এবং ভাবুন, দেরি হওয়া মানে শেষ হয়ে যাওয়া না।
৫। যদি আপনার অপর্যাপ্ত মনে হয়
এটা বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই হয়। স্বীকার করুন বা নাই করুন, এমনকি যাদের বাইরে থেকে খুব আত্তবিশ্বাসী মনে হয় তারাও ভিতরে ভিতরে দুশ্চিন্তা করে যে তারা হয়ত অপর্যাপ্ত এবং তারা হয়ত অদূরভবিষ্যতে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে না।
তবে এই অপর্যাপ্ত অনুভুতির মজার ব্যপারটা হলো এটাকে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রন করা যায়। আপনার এই অপর্যাপ্ত অনুভব, অন্য সবার মত, হয়ত এমন কোনো দক্ষতা ঘাটতি, বা অদূরদর্শিতা যেখানে আপনি সফল হতে চান।
এক্ষেত্রে আপনার পরিকল্পনা হতে হবে সাধারন। আপনাকে আপনার দক্ষতার ঘাটতি মকাবেলায় কাজ করতে হবে। একজন পরামর্শদাতা বের করুন, বই পড়ুন, সেমিনারে অংশগ্রহন করুন।
৬। যদি আপনি খুব ছাপ অনুভব করেন
এটা খুব স্বাভাবিক ব্যপার যে আজকের বিশ্ব মানুষের সময় এবং পরিস্রমের উপর অনেক চাপ দিয়ে থাকে। আপনি একজন উদ্দক্তা বা একজন নির্বাহী বা মানেজার বা কর্মী যাই হন না কেন, আপনাকে প্রতিনিয়ত আরও বেশি কাজ করতে বলা হবে।
তারপরেও আপনি অন্য সবার মত সময় এবং পরিস্থিতি দিয়ে সীমিত। আপনি যাই অনুভব করেন না কেন, আপনার একটা সীমিত সময় আছে যা দিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে এবং আপনাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে হবে।
যাই হোক আপনাকে গুরুত্ব নির্ণয় করতে হবে। জরুরি কাজ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে করা উচিত। মনে রাখবেন আপনার ২০ শতাংশ কাজ আপনার ৮০ শতাংশ ফলাফল এনে দেয়/ সুতরাং, ২০ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে অধিক মননিবেশ করুন।
[অনুবাদ]