কোন বিষয়ে আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত সেগুলো জেনে নিন। ব্যাপারগুলো যেন আপনার চোখ এড়িয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বেশিরভাগ মানুষই শুধু নিজের পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে থাকার চিন্তা করে। তারা ভালো থাকলেই কেবল, নিজেকে সুখী মনে করেন। নিচের বিষয়গুলো নিয়ে একটু চিন্তা করলেই বুঝবেন জীবন আপনাকে আরও কত কিছু দিয়েছে।
১। ব্যর্থতা
ব্যর্থতা সব কিছুর শেষ নয়। ব্যর্থতা, একটা স্বপ্ন বা আদর্শের মৃত্যু ছাড়া আর কিছু নয় – অধিকাংশ মানুষ এটাই বিশ্বাস করে। তবে একটা বিষয়ে ব্যর্থ হলে, আরও অনেক দিকে সম্ভাবনা রয়ে যায়, বেড়ে যায় সফল হওয়ার সম্ভাব্যতা। কারও কারও কাছে ব্যর্থতার কোন ক্ষমা নেই, এমনকি নিজের সন্তানের জন্যও না। ব্যর্থতা খুবই বাজে ব্যপার হতে পারে, কিন্তু নতুন কিছু করার চেষ্টা না করলে, ঝুঁকি না নিলে আপনার দক্ষতা আর অভিজ্ঞতার অপচয়ই হবে। শুকরিয়া করুন যে আপনি অন্তত কিছু ব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছেন, নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন। অনেকের এই সৌভাগ্যও হয় না।
২। সমালোচনা
মানুষ আপনার ভালো চায় বলেই সমালোচনা করে। আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানের সুযোগ আছে নতুন বা ভিন্ন কিছু করার, মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করার। সমালোচনা উদাসীনতার চেয়ে শ্রেয়।
৩। দুঃখ
আপনি দুঃখ পেলে, মন খারাপ করলে বুঝবেন আপনার ভেতর পরিবর্তনের ইচ্ছা আছে। উদাসীন হয়ে সুখে থাকার চেয়ে দুঃখ অনেক ভালো।
৪। সম্মান
যাদের আপনি পছন্দ করেন। যারা আপনার সম্মান আর বিশ্বাস অর্জন করেছে তাদের কথা ভাবুন।
শুকরিয়া করুন যে তারা আপনার জীবনের একটা অংশ। শুধু নিজের ভেতর রাখলে হবে না, তাদেরকেও জানান আপনার অনুভূতি। তারাও আপনাকে তাদের মাঝে পেয়ে কৃতজ্ঞ থাকবে।
৫। বিকল্প
ব্যক্তিগত জীবনে বা ব্যবসায় আপনার এতো বেশি বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে পারে যে আপনি হয়ত চিন্তায় পড়ে যেতে পারেন কোনটা ছেড়ে কোনটা ধরবেন। অন্যভাবে চিন্তা করুন, যদি আপনার করণীয় ব্যবস্থাগুলোর খুব কম বিকল্প থাকত বা একেবারেই না থাকত, তবে আপনি কি করতেন? খুশি হন, যে আপনার অনেকদিকে যাওয়ার রাস্তা আছে।
৬। সংগ্রাম
অনিচ্ছাকৃত নয়, ভালো কিছু করার জন্য আপনার কষ্ট, ত্যাগ, শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম আপনাকে শক্তিশালী করে। পরিশ্রম, অধ্যবসায় আপনার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, আপনার নিজের ওপর বিশ্বাস বাড়ায়। আপনি যখন যে কোন কাজে সময় দিবেন তখন আপনি জানতে পারবেন আপনার কাছে কোন বিষয়টি সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তা করে। সংগ্রাম আপনার কাছে আপনাকে পরিচিত করে, আপনার গন্তব্য চেনায়।
৭। দেরি
ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করা মজার কোন কাজ নয়, তবে মাঝে মাঝে এতে লাভ হয়। আপনি যদি ছুটির জন্য দিন গুণতে থাকেন, তবে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা আপনাকে আনন্দ দেয়। ছুটি হওয়ার আগ পর্যন্ত এটা থাকে। যদিও ছুটি শেষ হওয়ার দুই একদিনের মধ্যে এই আনন্দ কমে শূণ্যের কাছাকাছি চলে আসে। পরে আপনিও বোরিং জীবনে ফিরে যান। শুকরিয়া করুন যে আপনাকে অপেক্ষা করতে হয়, আপনি যা মনে প্রাণে চান তার জন্য। এই আশাই আপনাকে শক্তি যোগায়। আর, আপনার যা দরকার তার জন্য নয়, আপনি যা চান তার জন্য অপেক্ষা করা একধরণের বিলাসিতা যা কেবল কিছু সৌভাগ্যবান মানুষই করতে পারে।
৮। অনুশোচনা
এমন কিছুর ব্যপারে ভাবুন যা আপনি আর ভালো করতে পারতেন। অথবা অন্যভাবে করতে পারতেন। কিংবা কিছু একটা আপনি করতে পারতেন যা কোন কারণে আপনার করা হয়নি। কষ্ট পাচ্ছেন? তা হয়ত পাচ্ছেন, তবে আপনার জেদ বাড়ছে। এই জেদকে আজকেই কাজে লাগান। পুরোনো বন্ধুর সাথে সম্পর্ক ঠিক করুন, নিজে থেকে সরি বলুন। এমন কিছু করুন যা আপনি করতে চান। আপনি শান্তি পাবেন এইভেবে যে আপনি করেছেন।
৯। পরিবার
পরিবারের সবাই হয়ত সহ্য করার মত নয়। মা হয়ত আপনাকে বেশি বাচ্চা ভাবে, আপনার ভাই হয়ত আপনাকে পাত্তা দেয় না কিন্তু এরা আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ। এদের আপনার অসহ্য লাগতে পারে কিন্তু আপনি এদের মিস করবেন এক না এক সময়। হাসিমুখে সবার ভালোটা চিন্তা করুন। অনেকেই আপনার এই আজব পরিবারের মত পরিবার পেলেই অনেক খুশি হবে!
১০। বর্তমান
এই লেখা পড়ার সময় যেহেতু আপনার আছে, তাহলে আপনি নিজেকে, নিজের চিন্তা কে পরিবর্তন করার সময়ও পাবেন। নিজেকে উন্নত করুন, নিজের পরিবার আর বন্ধুর সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন। সময় আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। সময় সব সম্ভব করে। হেলায় সময় নষ্ট করবেন না।
[অনুবাদ]
ধন্যবাদ জনাব ।
Thanks a lot
আপনাকে ধন্যবাদ