ইউরেকা মিথ
আইজ্যাক নিউটন কীভাবে আপেল গাছের নিচে বসে থেকে মধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কার করেছিলেন তা কম বেশি সবার জানা। হয়ত মনে হতে পারে বড় বড় আইডিয়া এমনি এমনি ধরা দেয়, তবে আইডিয়া পেতে হলে কিছু চিন্তাভাবনা ও ধ্যান-ধারণা রাখাও জরুরি। কোন আইডিয়া নিয়ে ভাবার সময় একটু জিরিয়ে নিন, এই সামান্য বিরতি আপনার মনকে হালকা করতে সাহায্য করবে এবং পরে যখন আপনি আইডিয়া নিয়ে আবার ভাবতে শুরু করবেন তখন আপনার মন আরো সচলভাবে কাজ করতে পারবে।
ব্রিড মিথ
এই মিথ বলে যে কেউ কেউ স্বাভাবতই অন্যদের থেকে একটু বেশি ক্রিয়েটিভ, হতে পারে তা তাদের ব্যক্তিত্বের জন্য বা জন্মগতভাবে। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা এই মিথের সত্যতা পায়নি। সঠিকভাবে শেখানো গেলে যে কেউই ক্রিয়েটিভ হতে পারে।
অরিজিনালিটি মিথ
আপনি ভাবতে পারেন সকল সেরা আইডিয়াই অরিজিনাল, আসলে সেসব আইডিয়া অন্য কোন আইডিয়ার হাত ধরেই আসে। বর্তমান সময়ে একটি প্রযুক্তির উন্নতি করতে গিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির সৃষ্টি হচ্ছে। আবার একটি প্রযুক্তিকে ভালভাবে কাজে লাগাতে গিয়ে নতুন নতুন আইডিয়া জন্ম নিচ্ছে যা নতুন ধারার ক্রিয়েটিভির পথকে সুগম করেছে।
একপার্ট মিথ
একজন মানুষের জ্ঞান তার কাজের মানের উপর প্রভাব ফেলে ঠিকই তবে বেশি মাত্রায় দক্ষতা ক্রিয়েটিভির পথকে রুদ্ধ করে দেয়। কাজ করতে গেলে টিমের দরকার হয় আর টিমে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের মানুষের সমাবেশ ঘটলে এবং সমস্যা নিয়ে একসাথে কাজ করলে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পাবে এবং একই সমস্যার অনেকগুলো সমাধান বের হয়ে আসবে।
ইনসেনটিভ মিথ
একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধান করতে একজন মানুষের ইচ্ছাশক্তির উপর তার ক্রিয়েটিভিটি নির্ভরশীল। এই ইচ্ছাশক্তির বিনিময়ে আপনার কোন প্রতিদান আশা করা ঠিক হবে না। বাইরে থেকে কোন ইনসেনটিভ পাওয়ার চেয়ে নিজে থেকে মোটিভেটেড থাকা বেশি কাজে দেয়, এতে আপনার আগ্রহের কারণে আপনি সমস্যাটি নিয়ে ভালভাবে কাজ করতে পারবেন।
লোন ক্রিয়েটর মিথ
পৃথিবীর সেরা আবিষ্কারগুলোর পেছনে শুধুমাত্র একজনকেই কৃতিত্ব দেওয়া হয়ে থাকে যেমন থমাস এডিসনের লাইট বাল্বের আবিষ্কার। এডিসনকে লাইট বাল্বের আবিষ্কারক বলা হলেও তার এই আবিষ্কারের সাথে একটি প্রকৌশলী দলও জড়িত ছিল যারা এই প্রযুক্তিতে সমানভাবে অবদান রেখেছিল। মূল আবিষ্কারের পর প্রযুক্তিটিকে উন্নত করেছেন এই প্রকৌশলীরাই আর এডিসন তখন ব্যস্ত ছিলেন ক্লায়েন্ট, মিডিয়া আর বিনিয়োগকারীদের সামাল দেওয়া নিয়ে।
ব্রেইনস্টোর্মিং মিথ
আমরা সবাই ব্রেইনস্টোর্মিং সেশনে যোগ দিয়েছি কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই তা ঠিকভাবে করতে পারেনা। ব্রেইনস্টোর্মিং আসলে একটি ৮ ধাপের প্রক্রিয়াঃ সঠিক প্রশ্ন করা, এক্সপার্ট হওয়া, মনকে কাজে লাগানো, সমস্যা থেকে বিরতি নিয়ে মনকে হালকা করা, বেশি বেশি আইডিয়া খুঁজে বের করা, আইডিয়ার সমন্বয় করা, সেরা আইডিয়া বেছে নেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা।
কহেসিভ মিথ
ব্রেইনস্টোর্মিং করতে গিয়ে বেশি বেশি আইডিয়া খুঁজে বের করার জন্য সমালোচনাকে দূরে সরিয়ে রাখতে হয়। তবে মানুষজন যদি নিজের ইচ্ছামত আইডিয়া তুলে ধরতে চায় তাহলে সেটি তাদের জন্য নিরাপদ হওয়া উচিত। আর যদি কোন সমালোচনা থাকে তাহলে তাকে গঠনমূলক হতে হবে এবং তার সাথে আইডিয়াটি উন্নত করার পরামর্শও থাকতে হবে।
কনস্ট্রেইন মিথ
অনেকেই বলে প্রতিবন্ধকতা ক্রিয়েটিভিকে ব্যাহত করে, তাই বক্সের বাইরে চিন্তা করার কথা বলা হয় সব সময়। তবে বাস্তবে উল্টোটি প্রযোজ্য। যারা ক্রিয়েটিভ তারা জানে খালি অবস্থা বলতে কী বোঝায়। তারা জানে যে সকল ক্রিয়েটিভিটির জন্য কিছু কনস্ট্রেইন প্রয়োজন। সকলের জন্যই একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর দরকার হয় যেমন কবিতার ক্ষেত্রে ইংলিশ সনেট বা জাপানিজ হাইকু।
মাউসট্র্যাপ মিথ
আপনি ইঁদুর ধরার জন্য মাউসট্র্যাপ বানালেন ঠিকই কিন্তু তাতে কোন ইঁদুর ধরা দিল না – এমনটা হতেই পারে। আপনি আপনার ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে কিছু তৈরি করলেন কিন্তু হতে পারে অন্যরা তা এড়িয়ে গেল বা পাত্তা দিল না। তবে এর মানে এটা নয় যে আপনি দমে যাবেন।