নিজের অনলাইন উপস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করে একটি স্মরণীয় ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে পারেন আপনি।
১৯৯৭ সালে ম্যানেজমেন্ট গুরু টম পিটারস সর্বপ্রথম ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এর ধারণা দিয়েছিলেন, সেই থেকে তা এখন একটি অতি পরিচিত শব্দ। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মসহ অনলাইনে আপনার ব্যাপারে যেসব তথ্য রয়েছে তা আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের প্রতিফলন ঘটায়। এই লেখায় কীভাবে আপনি আপনার ব্যক্তিগত অনলাইন ব্র্যান্ডিং করবেন সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
১. নিজেকে জানুন এবং আপনি কোন কাজ ভাল পারেন তা আবিষ্কার করুন
আপনি যেমন তার উপরেই নির্ভর করবেন আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড, তাই নিজের ব্যাপারে আপনি অন্ধকারে থাকলে আপনার ব্র্যান্ডিং গড়ে উঠবে না। এর মানে এই নয় যে আপনার সব খুঁটিনাটি বিষয়াদি সামনে নিয়ে আসতে হবে, এর মানে এই যে আপনার সক্ষমতা এবং দুর্বলতাগুলোর একটি বাস্তবিক মূল্যায়ন করতে হবে। আপনি কী করতে ভালবাসেন, কী কী দক্ষতা আপনার রয়েছে বা কী কী দক্ষতা আপনি অর্জন করার চেষ্টা করছেন – এসব কিছুর মূল্যায়ন।
২. মনে রাখার মত একটি ব্র্যান্ড নাম ঠিক করুন
যদি আপনার মাথায় কোন অভিনব নাম থেকে তাখে, তাহলে সেটাকেই আপনার ব্র্যান্ড নাম হিসেবে ব্যবহার করুন। আর না থাকলে, এমন একটি নাম তৈরি করুন যার সাথে আপনার নিজের নাম এবং ক্যারিয়ারে একটা যোগসূত্র থাকবে। আপনি অবশ্যই চাইবেন মানুষ আপনাকে জানুক, আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার নামে অন্য আরেক ব্যক্তি সম্পর্কে মানুষ খোঁজ নিক। মনে রাখবেন, আপনার ব্র্যান্ড নামে যদি আপনার জীবনের লক্ষ্য জুড়ে দেন, তাহলে সেই লক্ষ্যটা কিন্তু সবসময় আপনার সাথেই থাকবে। (এজন্য প্রথম ধাপটি গুরুত্বপূর্ণ)
৩. অনলাইনে নিজের স্থান দখল করুন
আপনার ব্র্যান্ড নামের সাথে মিল রেখে একটি ওয়েব ডোমেইন কিনুন, এছাড়াও একই নামে একটা ফেইসবুক পেইজ, টুইটার অ্যাকাউন্ট এবং গুগল প্লাস অ্যাকাউন্টও করে নিন। যদি দেখতে পান যে আপনার নামটি আগেই ব্যবহৃত হয়ে গেছে, তাহলে অন্য আরেকটি ব্র্যান্ড ঠিক করুন। লিংকডইনে আপনি অবশ্যই আপনার নিজের নামই ব্যবহার করবেন, তবে আপনার ব্র্যান্ড নাম এমনভাবে সেখানে ব্যবহার করুন যাতে তা সহজেই চোখে পড়ে।
৪. আপনার ডোমেইন নামের জন্য একটি ওয়েবসাইট বানান
এটি করা তেমন কঠিন কিছু না। জটিল ওয়েবসাইট ব্যবহারে ঝামেলা না করে আপনি সহজেই পরিচিত সেবা যেমন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়েই আপনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন (অন্য বিকল্পও রয়েছে, তবে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করাটা সহজ)। আপনি নিশ্চয়ই কোন গতানুগতিক ওয়েবসাইট চাইবেন না কারণ সেগুলো কেমন জানি গৎবাঁধা সাধারণ অনুভূতির সঞ্চার করে থাকে।
৫. সয়ংক্রিয় আপডেট সেট করুন
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কষ্ট করে আলাদাভাবে কাজ করার চেয়ে, এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করুন যার ফলে একই সময়ে সবখানে আপনি কোনকিছু পোস্ট করতে পারবেন। আপনি হটসুট এর ফ্রি ভার্সন ব্যবহার করে দেখতে পারেন, এছাড়াও এরকম আরো ফ্রি এবং টাকা দিয়ে কিনতে হয় এমন বিকল্পও রয়েছে।
৬. নিয়মিতভাবে দরকারি তথ্য শেয়ার করুন
আপনার ফুল-টাইম ব্লগার হওয়ার দরকার নেই। বরং নিয়মিতভাবে আপনি যে পণ্য বিক্রি করে থাকেন তার ব্যাপারে দরকারি টিপস শেয়ার করুন বা শেয়ার করতে পারেন প্রাসঙ্গিক খবর এবং নিজের ব্যক্তিগত আপডেট যা আপনার ব্যাপারে একটি ইতিবাচক ধারণা দেবে। যেমন – কোন মানবসেবার কাজের আপডেট যেখানে আপনি যুক্ত ছিলেন।
৭. আপনার বিশ্বস্ত লোকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিন
অন্যদের পরামর্শ এবং উৎসাহ আপনার ব্র্যান্ড উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে আপনাকে সাহায্য করবে। আপনি আপনার নিজের বোর্ড অফ ডিরেক্টরস তৈরি করে নিতে পারেন যেখানে থাকবে কয়েকজন বিশ্বস্ত সহকর্মী যারা অনাড়ম্বর ভাবে আপনার চলমান প্রচেষ্টা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পারবে।
৮. ঝুঁকি থাকলেও নির্ভেজাল থাকুন
আপনি যদি নিজেকে পাগল বা অদ্ভূত হিসেবে না দেখান, তাহলে আপনার অনলাইন উপস্থিতি সম্পর্কে একটু আধটু মতামত পাওয়াটা দোষের কিছু নয়। আপনার নিজস্ব ব্যক্তিগত কিছু যে অন্যদেরকে দূরে ঠেলে দেবে এমনটি ভাববেন না। যারা চলমান স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয় তাদের সাথে কেউ কিন্তু এখন আর কাজ করতে আগ্রহী হয় না।
[অনুবাদ]