বড় বড় আইডিয়া অবশ্যই ভাল, তবে সফল হতে গেলে আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদাভাবে চিন্তা করতে হবে।
অন্যদের থেকে আলাদাভাবে চিন্তা করা এবং নতুন স্বপ্ন দেখা হয়ত একটু কঠিন। আমরা সবাই সফল চিন্তাবিদ এবং মহৎ কিছু করে দেখাতে চাই। তবে সবাই তাদের চিন্তাধারাকে শাণিত করতে পারে না। এবং এটাই বরং স্বাভাবিক। আমাদের সবার চিন্তাধারাই ভিন্ন এবং সে হিসাবে আমাদের সাফল্য অর্জনের ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। এখানে ৫টি জিনিস যা অন্যরা সাধারণত ভেবে থাকে এবং আপনি সেই ভাবনাটাই কীভাবে ভিন্নভাবে ভাবতে পারেন তা দেওয়া হল।
“আমি কখনও সঠিক সুযোগ পাই না।“
যত যাই হোক না কেন, আমরা কেউই কিন্তু আমাদের মন মত সুযোগ সব সময় পাই না। সুযোগ আদায় করে নিতে হয়। আর আপনি যেই সুযোগ পাননি সেটা নিয়ে ভেবে কী লাভ? হয়ত আপনার প্রমোশন বা কাজের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আপনাকে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। সুযোগ সব সময়ই সীমিত থাকে, সেটা লুফে নিতে হয়। এখন সোশ্যল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি যেকারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, আপনার পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রিও করতে পারেন, আপনাকে এখন অন্য কারোর দেওয়া সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকার প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেই নিজেকে সুযোগ তৈরি করে দিতে পারেন এবং সফল মানুষেরা যুগ যুগ ধরে এমনটাই করে আসছে। সুযোগকে কাজে না লাগানোর পেছনে শুধুমাত্র আপনি এবং চেষ্টা করতে আপনার অনীহাই দায়ী, অন্য কেউ নয়। অন্যের কাছ থেকে সুযোগ পাওয়া নয়, বরং নিজের জন্য সুযোগ তৈরি করা নিয়ে ভাবা জরুরি।
“অন্যদের জন্য আমি কিছু করতে পারি না।“
হতে পারে অন্য কেউ আপনার সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে বা আপনার কাজকে নিজের বলে জাহির করেছে। হতে পারে আপনার পণ্য সরবরাহকারী সময় মত পণ্য দিতে পারেনি। বা হতে পারে ক্রেতারাই আপনার পণ্যের মান বুঝে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। আপনি অন্যদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না, শুধু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। যদি কোন ক্ষতি হয়, তাহলে ধরে নেবেন সেটা আপনার দোষেই হয়েছে। হয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যদের দ্বারা ক্ষতি হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিন্তু নিজের দোষের কারণেই আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হই। প্রতিটি সফল মানুষই অনেকবার ব্যর্থ হয়েছে, হয়ত আপনার থেকেও বেশি আর এজন্যই তারা আজ সফল হতে পেরেছে। যেকোন ব্যর্থতাকে ইতিবাচকভাবে দেখুন। তা থেকে শিখুন এবং পরেরবার একই ভুল যাতে না হয় সেটার পূর্ণ দায়িত্ব নিন। অন্যের দোষ নিয়ে না ভেবে নিজে দায়িত্ব সহকারে কাজ করলে ব্যর্থ হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
“আমার সময়ের বড় অভাব।“
আমাদের সবারই কিন্তু দিনে ২৪ ঘন্টা সময় থাকে, কারো বেশি বা কম সময় থাকে, এমন কিন্তু না। তাই সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোই মূল কথা। যেমন, কাজের শিডিউল করার সময় আমরা প্রতিটি কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করি, কিন্তু সব সময় ঐ কাজটি করতে ঐ ততটুকুই সময় লাগবে এমন কোন কথা নেই। চেষ্টা করুন সব কাজ দ্রুত ও কার্যকরভাবে করে ফেলতে তাহলে বেঁচে যাওয়া সময়ে আপনি অন্য কাজ করতে পারবেন। সময়কে আপনার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্টা না করতে দিয়ে বরং আপনি কীভাবে সময়কে ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তা ভাবুন। এমনটা ভাবলে দেখবেন আপনার আর সময়ের অভাব হবে না।
“করার মত হলে আমি এটা অবশ্যই করব।“
সফল কর্মচারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেই তাদের প্রমোশন ও বাড়তি বেতন আদায় করে নেয়। তারাই তাদের সাফল্য নিশ্চিত করে। ঠিক তেমনি সফল ব্যবসাগুলো মান-সম্মত পণ্য বা সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই তাদের উচ্চ আয় নিশ্চিত করে থাকে। প্রথমে কোন প্রতিদানের আশায় না থেকে যা শুরু থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে, তারাই পরবর্তীতে গিয়ে ভাল প্রতিদান পায়। তাদের প্রচেষ্টা ও ত্যাগই তাদের সাফল্য অর্জনে সহায়ক হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ মানুষই করার আগে আগে ভাবে যে তারা কী পাবে। সফল হতে গেলে প্রতিদান পাবার আশায় কাজ না করে বরং কাজ করেই পুরস্কার হিসেবে প্রতিদান আদায় করে নিতে হবে।
“আমার মাঝে বিশেষ কোন দক্ষতা নেই।“
আপনি হয়ত ভাবতে পারেন যে যারা উদ্যোক্তা তাদের হয়ত বিশেষ কোন দক্ষতা থাকে যা আপনার নেই। ব্যাপারটা কিন্তু তা না। প্রতিভা থাকলেই যে কেউ সফল হবে এমনটা নয়, বরং কেউ সফল হলেই তার প্রতিভা প্রকাশ পায়। এটা ঠিক যে অন্যরা যা পারে হয়ত আপনি তা পারেন না তবে আপনারও এমন কিছু দক্ষতা আছে যা অন্যদের নেই। অন্য কোন কিছুর দরকার নেই, আপনার দরকার আপনার নিজেকে কাজে লাগানো এবং কাজ করার অদম্য ইচ্ছাশক্তি যার মাধ্যমে আপনার প্রতিভার দ্যূতি ছড়িয়ে পড়বে। যা নেই তা নিয়ে না ভেবে যা আছে তা নিয়ে ভাবুন। অন্যরা যা করতে ইচ্ছুক নয় আপনি সেটা নিয়েই কাজ করুন। এটাই আপনার বিশেষ দক্ষতা হয়ে উঠবে যা আপনাকে সব সময় কাজে লাগাতে হবে।
[অনুবাদ]