Choosing between failure and success

বলা হয় আপনি যতবার প্রত্যাখ্যাত হবেন ঠিকই ততটাই সাফল্য লাভ করবেন

আপনি যদি আগে থেকেই ধরে রাখেন যে অন্যরা আপনাকে প্রত্যাখান করবেন, তাহলে আপনার ভয়ের কারণে আপনি কার্যক্ষমতা হারাবেন। এই ভয়কে প্রথমে জয় করতে হবে এবং তারপর যদি আপনি সফল হতে চান, আপনাকে জেনে নিতে হবে কিভাবে প্রত্যাখানকে আপনি ইতিবাচকভাবে আপনার লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত করতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হলঃ

কেন আপনি প্রত্যাখ্যাত অনুভব করেন তা বুঝতে হবে

ধরুন আপনি ভালভাবে একজন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীর কাছে আপনার ব্যবসা তুলে ধরলেন কিন্তু বিনিয়োগকারী বলল, “ঠিক আছে, আমরা আপনাকে পরে জানাব।“ বা খারাপ হলে “আপনার আইডিয়া আমাদের পছন্দ হয়নি, দুঃখিত”। বিনিয়োগটা হাতছাড়া হয়ে যাওয়া অবশ্যই দুঃখজনক। এই অবস্থায় আপনি হতাশ, দুঃখী বা রাগান্বিত হওয়ার পরিবর্তে কেন প্রত্যাখ্যাত অনুভব করবেন? এর কারণ হল আপনি বিনিয়োগকারীর  মন্তব্যকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন এবং তাতে মর্মাহত হয়েছেন। প্রত্যাখ্যাত অনুভব করার ৩টি কারণ আছেঃ

যখন এটি প্রায়ই হয়।ধরুন আপনি প্রতিটি বিনিয়োগকারীর কাছ থেকেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন বার বার। আপনি জানেন আপনার আইডিয়াটি ভাল, কিন্তু অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে আপনি ধরে নিলেন যে হয়ত আপনারই কোথাও ভুল হচ্ছে

যখন আপনি আবেগপ্রবণ থাকেন। যখন আপনি মনে-প্রাণে একটি কিছু ধারণ করেন এবং অন্যরা তা গ্রাহ্য করে না, তখন আপনি মনে কষ্ট পান।

যখন আপনি ‘রিজেক্টর’ কে সম্মান দেখান।যখন আপনি অন্য পক্ষকে সম্মান করে থাকেন এবং সে আপনাকে প্রত্যাখান করে দেয়, তখন সেটি আপনার কাছে মেনে নেওয়া কষ্টকর হয়।

প্রত্যাখানের তিক্ততা কমিয়ে ফেলুন

আপনার প্রত্যাখ্যাত অনুভব করার কারণগুলো জানলেন, এবার এই কারণগুলোকে দূর করতে হবে যাতে প্রত্যাখানের তিক্ততা আপনি কমিয়ে আনতে পারেন। যদি আপনি বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মত অন্য যারা আছে তাদের দিকে তাকান এবং ধৈর্য্য ধরুন। যেমন সেলসে যারা কাজ করে তাদেরকে হয়ত একশতেরও বেশি ফোন কল করতে হয় মাত্র একটি পণ্য বিক্রি করার জন্য। যদি আপনি অন্য পক্ষের সাথে আবেগীয়ভাবে যুক্ত থাকেন, তাহলে পরিস্থিতির পরিণাম যাই হোক না কেন সেটার সাথে খুব বেশি সম্পৃক্ত হতে যাবেন না। আপনার পরিচিত কেউ আপনার আইডিয়াতে অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে কিন্তু তার সাথে সম্পর্ক ছেঁদ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, হতে পারে ভবিষ্যতে এই ব্যক্তিই ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ দেখাবে। আর অন্য মানুষটি যদি আপনার শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে থাকে তাহলে বাস্তবতার নিরিখে পরিস্থিতিকে বিবেচনা করুন। অন্যদেরকে খুব বেশি সম্মান দেওয়ার কিছু নেই কারণ তারাও আপনার মত মানুষ, কোন দেবতা নন।

অমূলক প্রত্যাখানগুলো দূরে সরিয়ে রাখুন

এবার প্রাসঙ্গিক ও অমূলক আপত্তি আলাদাকরণে বাস্তব-সম্মত যুক্তি প্রয়োগের পালা। প্রাসঙ্গিক আপত্তি হল আপনি যা করতে পারেন সেটা যখন অন্যকে করতে বলেন এবং সে আপনাকে না করে দেয়। অমূলক আপত্তি হল আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে কোন কিছুর ফলে আপনার সাফল্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যেমন আপনি একটি সভায় আপনার ক্লায়েন্টকে আমন্ত্রণ জানালেন, কিন্তু আপনি তার নামে ভুল করলেন এবং সে আপনার সভা থেকে উঠে চলে গেল, এটি প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখান। আবার আপনি একটি সেলস কল করলেন এবং অপর পক্ষ আপনার কোম্পানিকে কয়েকটি গালি দিয়ে কল কেটে দিল। আপনার সেলস প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অপর পক্ষের দেওয়া গালি কিন্তু আপনার সাথে মোটেও সম্পর্কযুক্ত নয় এবং এটি একটি প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখান নয়। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখানের চেয়ে অমূলক প্রত্যাখানের ঘটনা ঘটে বেশি। আর অমূলক প্রত্যাখানের ব্যাপারে আপনার করার মত তেমন কিছুই নেই, তাই ওগুলো নিয়ে চিন্তা না করাই ভাল।

প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখানগুলোকে এমনভাবে ব্যবহার করুন যেন তা আপনার সাফল্য নিয়ে আসে

ধরুন আপনি একটি বই প্রকাশ করতে চান, কিন্তু প্রকাশকরা আপনার বইকে প্রত্যাখান করে চিঠি দিল। এভাবে জমতে জমতে অনেকগুলো চিঠি হয়ে গেল। এমতাবস্থায় আপনার মন খারাপ করা উচিত হবে না। আপনি এই প্রত্যাখানের চিঠিগুলো আপনার ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখুন এবং প্রতিদিন সকালে উঠে এক এক করে চিঠিগুলোর উপর দিয়ে পার হয়ে যান আর মনে মনে ভাবুন, যত বেশি আপনি প্রত্যাখ্যাত হবেন, অবশেষে ততটাই ভাল অফার আপনি অর্জন করতে পারবেন। এভাবে দেখতে দেখতে হয়ত একটি ভাল প্রকাশক আপনার বই প্রকাশে আগ্রহ দেখাবে এবং আপনার ক্যারিয়ারে নতুন মোড় এনে দিতে পারে। সাফল্যের কোন সহজ পথ নেই, তাই নিজেকে সবসময় মনে করিয়ে দেবেন যে প্রত্যাখান মানেই হল অর্থযোগ ও সম্ভাবনা।

উপযুক্ত বিজনেস দক্ষতা গড়ে তুলুন

প্রত্যাখানের ধরন সম্পর্কে জানলেন, অমূলক প্রত্যাখান ফিল্টার আউট করে দিন আর প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখানগুলো নিয়ে ভাবুন যে কী করলেপরিস্থিতির উন্নতি করে  আপনি সাফল্য অর্জন করতে পারেন। যদি আপনি বিনিযোগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম না হন, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ দ্বারা আপনার বিজনেস প্ল্যান পুনরায় পর্যালোচনা করে নিন বা আরো উন্নত বিজনেস মডেল তাতে অন্তর্ভুক্ত করুন। যদি আপনার ফোন কলগুলো একঘেঁয়ে হয়ে যায়, তাহলে আপনার কথা বলার ধরনে পরিবর্তন আনুন।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে প্রত্যাখানের ব্যাপারে আপনি আপনার আবেগকে ভালভাবে বশে এনে মর্মাহত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন এবং প্রাসঙ্গিক প্রত্যাখানগুলো কমিয়ে আনার ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করবেন।

[অনুবাদ]

Similar Posts

Leave a Reply