কর ব্যবস্থা বাদ দিলে অন্য যে মূল বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয় তা হল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দায় সীমিতকরণ কতটুকু। যার মানে হল ব্যবসার পাওনাদারদের দাবি থেকে ব্যবসার সম্পদকে রক্ষা করা। বিভিন্ন কর্পোরেশন (সি এবং এস কর্প), এলএলসি ও নির্দিষ্ট ধরনের পার্টনারশিপে রাষ্ট্রীয় আইন দায় সীমিতকরণের সুযোগ দিয়ে থাকে। কর্পোরেশন এবং এলএলসিতে আপনি যতটুকু বিনিয়োগ কুরবেন, ব্যবসার প্রতি আপনার দায় ঠিক ততটুকুই থাকবে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ধরনর
সি এবং এস কর্প
এস কর্প (কর কোডের একটি অধ্যায়ে এই নামটিই ব্যবহার করা হয়েছে) হল একটি কর ডিভাইস যা ১৯৫৮ রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে সূচিত হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী এটি একটি সাধারণ কর্পোরেশন যেখানে সীমিত দায় থাকবে কিন্তু এর মালিকরা কর দেওয়ার খাতিরে প্রতিষ্ঠানটিকে চলমান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে থাকে। এই স্ট্যাটাস পাবার জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় যার ফলে ঐ কর্পোরেশনগুলো কর্পোরেট কর থেকে অব্যাহতি পেতে পারে, এই নিয়মের কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। নিয়মিত এস কর্পগুলোকে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সাধারণ কর্পোরেশনের মতই বা অন্য কোনভাবে করের আওতায় নিয়ে আসা হতে পারে। যেসব কর্পোরেশনের মালিকরা নির্বাচন করে এস কর্প স্ট্যাটাস নিতে চায় না, সেসব কর্পোরেশনকে সি কর্প বলা হয় (কর কোডের একটি অধ্যায় এই নামটি ব্যবহার করা হয়েছে)
পার্টনারশিপ
সাধারণ পার্টনারশিপকে বলা হয় জেনারেল পার্টনারশিপ এবং আইন অনুযায়ী এগুলোর সীমিত দায় থাকে না।
অল্প কিছু পার্টনারশিপে কিছু কিছু পার্টনারের জন্য (সবার জন্য নয়) সীমিত দায় রাখার সুযোগ রয়েছে। সীমিত দায়ের পার্টনারশিপে জেনারেল পার্টনার (যারা ব্যবসা চালায়) এবং সীমিত দায়ের পার্টনার (যারা পরোক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে থাকে) থাকে। সীমিত দায়ের পার্টনাররা যতটুকু বিনিয়োগ করে, তাদের দায় ততটুকুই থাকে। অন্যদিকে জেনারেল পার্টনারদের দায় থাকে অসীম তবে জেনারেল পার্টনার যদি কোন প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকে যেমন কোন সীমিত দায়ের কর্পোরেশন তাহলে ব্যবসায় তাদের দায়ও সীমিত করা সম্ভব। আইন অনুযায়ী, যখন কোন সীমিত দায়ের পার্টনার ব্যবসার ব্যবস্থাপনায় একটু বেশিই সম্পৃক্ত হয়ে যায় তখন সে সীমিত দায়ের সুযোগ হারিয়ে জেনারেল পার্টনার হয়ে যায়। জেনারেল হোক বা সীমিত দায়েরই হোক, সব পার্টনারশিপকে চলমান প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরা হয় আইনের চোখে তবে জেনারেল এবং সীমিত দায়ের পার্টনারদের উপর কর আরোপ করায় কিছু ছোট খাটো তারতম্য রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পেশাদারি কার্যক্রমের খাতিরে উদ্ভব হয়েছে সীমিত দায়ের পার্টনারশিপ (নিচে আলোচনা করা হল), যদিও তা সবখানে এখনও প্রচলিত নয়। অন্য ধরনের একটি পার্টনারশিপ হল সীমিত দায় সীমিত পার্টনারশিপ যেখানে জেনারেল এবং সীমিত দায়ের পার্টনার সবার দায় সীমিত রাখার সুযোগ থাকে, এটি সবখানে এখনও প্রচলিত নয়। পাবলিক কার্যক্রমের পার্টনারশিপকে কর ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য সি কর্প হিসেবে ধরা হয়।
লিমিটেড লায়াবিলিটি কোম্পানি (এলএলসি)
অনেক নতুন ব্যবসার জন্য এলএলসি হল একটি জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের ধরন আর অনেক বিদ্যমান ব্যবসা তাদেরকে এই ধরনে রূপান্তরিত করেছে। প্রতিটি দেশের এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের দেখা পাওয়া যায়। কর্পোরেশনের সীমিত দায়, এবং পার্টনারশিপ ও এস কর্প এর চলমান স্ট্যাটাস এর মিশ্রণ এদের মাঝে দেখা যায় কিন্তু এ ধরনের প্রতিষ্ঠান এস কর্প এর থেকেও অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল। ব্যবসায়িক আইনের খাতিরে, এলএলসির সদস্যরা পরোক্ষ বিনিয়োগকারী বা প্রত্যক্ষ বিনিয়োকারী-ম্যানেজার যেকোনটাই হতে পারবে। সীমিত দায়ের পার্টনারশিপের বিপরীতে গিয়ে, এখানে ব্যবসায় সরাসরি সংশ্লিষ্টতা হয় কিন্তু দায় সীমিতকরণের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। রাষ্ট্রীয় কর ব্যবস্থার খাতিরে এলএলসিদেরকে পার্টনারশিপ হিসেবেই ধরা হয় (যদি অন্য কোন নির্দেশনা না দেওয়া থাকে)।
লক্ষ্য করুন: যেহেতু এলএলসির নিয়মনীতি একেক দেশের একেক রকম, তাই এলএলসি যে দেশে যাত্রা শুরু করে সেই দেশের নিয়ম ঐ প্রতিষ্ঠানটি অন্য কোন দেশে যদি কাজ করে থাকে, সে দেশের প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কিছু কিছু দেশ একজন সদস্য বিশিষ্ট এলএলসির অনুমোদন দেয়, আবার অনেক দেশই অনুমোদন দেয় না।
টিপস: যদি কোন দেশের এলএলসির মাত্র একজন সদস্য থেকে যায় এবং ঐ দেশের এক সদস্য বিশিষ্ট এলএলসির অনুমোদন নেই, তাহলে পুনরায় কর্পোরেশন করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে (সীমিত দায় সুযোগের জন্য) এবং এস কর্প স্ট্যাটাস নির্বাচন করতে হবে (চলমান প্রতিষ্ঠানের সুযোগ নেওয়ার জন্য)।
[অনুবাদ]
পৃষ্ঠপোষকতায় –